সোমবার, ৮ মে, ২০১৭

শবে বারাআত কি বিদয়াত বলা যায়?

শবে বারাআত অর্থ মুক্তির রাত। কিন্তু হাদীসে এই রজনীকে “লাইলাতুন নিসফে মিন শা’বান” বা শা’বান মাসের মধ্য রজনী বলা হয়েছে। কুরআনুল কারীমের কোথাও এই রাত্র সম্পর্কে কোন উল্লেখ নেই। বলা বাহুল্য কেউ কেউ সূরা দুখানে উল্লেখিত লাইলাতুম মুবারাকাকে এই রাত্রির দলীল হিসেবে পেশ করেন। তবুও জমহুর ওলামা তথা প্রায় সকল মুফাসসির এ বিষয়ে ঐক্যমত পোষন করেছেন যে লাইলাতুম মুবারাকা দ্বারা লাইলাতুল কদরকে বুঝানো হয়েছে। শুধু মাত্র ইকরামা সহ অল্প কয়েকজন মুফাসসির বলেছেন এর দ্বারা লাইলাতুম মিন নিসফে শা’বানকে বুঝানো হয়েছে। নফল ইবাদত করার জন্যে কুরআনের আয়াত দিয়ে সাবেত করার কোন প্রয়োজন নেই। যেহেতু এই রাত্রটি হাদীস দ্বারা প্রমানিত তাই শবে বারা্আতকে বিদয়াত বলার কোন সুযোগ নেই। অন্যদিকে এই রাত্রটিকে শবে বরাত বলার কারনে বিদয়াত বলার দুঃসাহস দেখায় তাই শবে বরাত না বলে শবে বারাআত বললে ঝামেলা মিটে যায়। প্রকাশ থাকে যে, এই রাত্রি সম্পর্কে যতগুলো হাদীস পাওয়া যায় প্রায় অধিকাংশ হাদীস মওজু এবং দূর্বল। তদুপরিও সহীহ হাদীস বিদ্যমান। ইবনে মাজা শরীফের বাবু মা যাআ লাইলাতুম মিন নিসফে শা’বান এর মধ্যে একটি হাসান সহীহ হাদীস এসছে যাকে নাসির উদ্দীন আলবানী ও সহীহ বলেছেন। عن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال ( إن الله ليطلع في ليلة النصف من شعبان . فيغفر لجميع خلقه . إلا لمشرك أو مشاحن ) “ আবু মূসা আশয়ারী রাসূল সাঃ থেকে বর্ননা করেন তিনি বলেছেন আল্লাহ তায়ালা শা’বান মাসের মধ্য রজনীতে এক বিশেষ ভূমিকায় অবতীর্ন হন এবং মুশরেক ও হিংসুক ব্যতীত সবাইকে ক্ষমা করে দেন।” সহীহ ইবনে হিব্বানের মধ্যে এসছে ( يطلع الله إلى خلقه في ليلة النصف من شعبان فيغفر لجميع خلقه إلا لمشرك أو مشاحن “অর্ধ শা’বানের রাত্রে আল্লাহ পাক মাখলুকের উনার সমস্ত মাখলুকের প্রতি মনোযোগ আরোপ করেন এবং মুশরিক এবং হিংসুক ব্যক্তি ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন।” এখন কেহ যদি এই রাত্রিতে ক্ষমা প্রাপ্তির আশা নিয়ে তওবা, নফল ইবাদত করে, মীলাদ মাহফিল করে দোয়ার আয়োজন করে তা কেন শরীয়তে নিষিদ্ধ হবে তা বোধগম্য নয়। কেননা রাসূল সাঃ বলেছেন إنما الأعمال بالنيات “নিয়তের উপর কাজের ফলাফল নির্ভর করে।” তবে সারা বছর ইবাদতের ধারে কাছে না ঘেষে শুধু এই রাত্রিতে যারা ইবাদত করে এবং পরবর্তী দিন থেকে আবার যেই সেই হয়ে যায় তাহলে এই ইবাদত নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। অন্য দিকে দেখা যায় এই রাত্রিতে পটকা ফুটানো, আতশ বাজী করন, হালুয়া রুটি তৈরী করে বিতরন করাকে আবশ্যক মনে করা হয় তা সম্পূর্নরুপে বিদয়াত হবে। তবে ওলায়ে কেরামগন বলেন, এই রাত্রিতে নফল ইবাদতের চেয়ে তওবা করে নিজের গুনাহ থেকে ক্ষমা পাওয়ার জন্যে কান্নাকাটি করলে এবং পাপ থেকে বিরত থাকার লক্ষ্যে সংকল্পবদ্ধ হলে সবচেয়ে বেশী লাভবান হওয়া যাবে। আল্লাহ সবচেয়ে বেশী ভালো জানেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন